ম&#
১৬

মামুনুর রশিদ পড়ালেখা করেছেন ঢাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। জন্মসূত্রে বরিশালের ছেলে। বর্তমানে বাবার চাকুরীর সুবাদে এখন খুলনায় বসবাস করছেন। সেখানে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে এত বড় একটা টিম পরিচালনা করছেন। মামুনুর রশিদের কম্পিউটারের সাথে পরিচয় ২০০১ সালে, S.S.C পরীক্ষার পর থেকে। নিজের আগ্রহ এবং বাবার উৎসাহে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ালেখা করেছেন। পড়ালেখা শেষ করে ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে এবং পরবর্তীতে খুলনায় একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় কিছুদিন কাজও করেছেন।
ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ফিচার থেকে। এরপর www.odesk.com, www.freelancer.com এবং www.rentacoder.com এ একাউন্ট তৈরি করে নেন। কিন্তু প্রথম অবস্থায় অনেক বিড (Bid) করার পরও কাজ না পাবার কারণে ফ্রিল্যান্সিং আর করা হয় নি। বছর দেড়েক পরে "কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে একটা লেখা পড়ে এ বিষয়ে পুনরায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এবারে নিজের একটি ভাল প্রোফাইল তৈরি করেন এবং এলোমেলোভাবে বিড না করে প্রতিটি প্রজেক্ট ভালভাবে বুঝে বিড করা শুরু করেন। ৪ দিন পর এক সাথে দুটি প্রজেক্ট পেয়ে যান। প্রথম প্রথম ডাটা এন্ট্রি দিয়ে শুরু করেছিলেন। বর্তমানে Project Manager, Wordpress, Magento Shopping Cart, X-Cart Shopping Cart, Zen Cart Shopping Cart এর কাজ গুলো করে থাকেন। কাজ করার সময় সততা, কাজ এর গুনগত মান এবং ডেড লাইন এর দিকে যথাসম্ভব সর্তক থাকেন।
জানতে চেয়েছিলাম ওডেস্কে টিম কেন তৈরি করলেন। জানালেন ওডেস্কে কাজ শুরু করার মাত্র ২ মাস পর প্রচুর পরিমান কাজ পেতে শুরু করেন, যা একার পক্ষে সম্পন্ন করা অসম্ভব হয়ে গেল। প্রথম দিকে ক্লায়েন্টদের ফিরিয়ে দিতেন, কিন্তু পরে টিম করার কথা ভাবলেন।
সবচেয়ে মজার বিষয় হল টিমের সদস্যদের সবাইকে অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে চ্যাট করার জন্য ইয়াহু এবং স্কাইপ সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকেন। আর সদস্যদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য সিটিসেল ব্যবহার করে থাকেন। প্রজেক্টের নির্দেশাবলী বোঝানোর জন্য টিম ভিউয়ার সফটওয়্যার ব্যবহার করেন। সকল সদস্য ও সকল প্রজেক্ট পরিচালনা করার জন্য টিমে একজন ম্যানেজার এবং চারজন সুপারভাইজার রয়েছে। অনলাইন থেকে নতুন অদক্ষ সদস্য সংগ্রহ করা হয় এবং তাদের ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে তোলা হয়। অবশ্য এর জন্য তাদের কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা নেওয়া হয় না। বর্তমানে "আলফা ডিজিটাল" টিম ২৫-৩০ জন ক্লায়েন্টের সাথে নিয়মিত কাজ করছে। কাজের মধ্যে রয়েছে Data Entry, Personal Assistant, Web Research, Email Response Handling, Advertising, Email Marketing, Social Media Marketing, Search Engine Optimization, Search Engine Marketing, Social Media Marketing, Market Research And Surveys, Web Design এবং Wordpress।
বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য ফোনে কথা বলেছিলাম মামুনুর রশিদের সাথে। এই কথোপোকথনগুলো নিচে উপস্থাপন করা হল -

মামুন: ওডেস্কে দুইভাবে কাজ করা যায়। একটি হচ্ছে স্বতন্ত্রভাবে এবং একটি হচ্ছে কোম্পানী তৈরির মাধ্যমে। ওডেস্কে স্বতন্ত্রভাবে একাউন্ট তৈরি করার পর কোম্পানী তৈরির জন্য একটা অপশন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কোম্পানির একটি নাম এবং আইডি দিতে হয় যা কখনও পরিবর্তন করা যায় না। কোম্পানির অধীনে আবার বেশ কয়েকটি টিম তৈরি করা যায়। যেমন আমাদের "আলফা ডিজিটাল" কোম্পানীর অধীনে ৫ টি টিম রয়েছে - আলফা ডাটা, আলফা ওয়েব, আলফা ডিজাইন, আলফা এসইও ইত্যাদি।
জাকারিয়া: টিমের সদস্যের ম্যানেজ করার জন্য কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়?
মামুন: ওডেস্ককে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা বলতে পারেন, অনেকটা অফিস ম্যানেজমেন্ট করার মত। আমাদের কাজ করার জন্য "ওডেস্ক টিম সফটওয়্যার" নামক নির্দিষ্ট একটা সফটওয়্যার চালু করে কাজ করতে হয়। সফটওয়্যারের আকার অত্যন্ত ছোট, ৪২২ কিলোবাইটের মত।
জাকারিয়া: ওডেস্কে টিমের জন্য বিড কিভাবে করতে হয়? টিমের পক্ষ থেকে এটা কি আপনি করে থাকেন নাকি সদস্যরা নিজেরাই বিড করে থাকে?
মামুন: এখানে একটা কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন, যখন একজন নতুন সদস্য আমার টিমে যোগ দেয়, তখন তাদের আইডির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আমার কাছে চলে আসে। তাদের কাছে নিয়ন্ত্রণ থাকে শুধু বিড করা আর কাজ করা। সাথে প্রোফাইলের নাম বা এধরনের বিষয় পরিবর্তন করতে পারে, এছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। এমনকি কাজের মূল্য পর্যন্ত আমার উপর নির্ভর করে। তাদের ব্যালেন্সও আমার কাছে আসে। কাজ করার জন্য জন্য একজন সদস্য নিজেও বিড করতে পারে এবং আমিও তাদের জন্য বিড করতে পারি।
জাকারিয়া: যখন একটা নতুন কাজ পেলেন তখন সেই কাজটা কি তারা নিজেরাই শুরু করে দিতে পারে?
মামুন: একটা কাজ যখন কোন সদস্য পায় তখন সে নিজেই বায়ার (Buyer) কে ইমেইল করে কাজের বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করে। ক্লায়েন্টের কাছ থেকে যখন উত্তর আসে তখন সে নিজে বুঝতে চেষ্টা করে। বুঝতে পারলে কাজ শুরু করে দেয় আর না পারলে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমি তাকে কাজটি বুঝিয়ে দেই।
জাকারিয়া: টিমের ব্যবস্থাপনা কি শুধু আপনি একাই করছেন?
মামুন: টিমের ব্যবস্থাপনা করার জন্য আমাদের একজন ম্যানেজার এবং চারজন সুপারভাইজার রয়েছেন। টিমের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আমি ইচ্ছে করলে কাউকে ম্যানেজার করে দিতে পারে। আমাদের টিমের ম্যানেজারের হাতে একাউন্ট অংশটা বাদে একজন ফ্রিল্যান্সারকে নিয়োগ দেয়া থেকে শুরু করে সকল ক্ষমতাই আছে।
জাকারিয়া: এবার কি কি কাজ করছেন সে সম্পর্কে যদি একটু ধারণা দিতেন, যেমন কোন ধরনের ডাটা এন্ট্রি কাজ করে থাকেন ইত্যাদি?
মামুন: আমরা এই মূহুর্তে একটি ইকমার্স সাইটের কাজ করছি। এদের সাথে প্রায় ছমাসের মত কাজ করছি। আমাদের ১২ জন মেম্বার এই প্রজেক্টে কাজ করছে। আমরা বিভিন্ন প্রডাক্টের নাম, ছবি, মূল্য, বর্ণনা ইত্যাদি সাইটের Admin Panel এ যোগ করে দেই। ডাটা এন্ট্রি কাজের রেট কখনও ঘন্টায় ১ থেকে ১.৫ ডলারের বেশী পাওয়া যায় না।
আরেক ধরনের কাজ করি সেটা হচ্ছে ওয়েব রিসার্চ। এ ক্ষেত্রে ২ থেকে ৪ ডলার প্রতি ঘন্টায় পাওয়া যায়। এ ধরনের কাজের উদাহরণ হচ্ছে, মনে করুন আপনি হোস্টিং ব্যবসা করবেন। এক্ষেত্রে আপনি হয়ত অন্যান্য হোস্টিং কোম্পানীর বিভিন্ন প্লানের মূল্য জানতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আমরা ইন্টারনেটে এই রিসার্চটা করে প্রতিদ্ধন্দী কোম্পানীর মূল্য বের করে দেই।
আমরা ইমেইল মার্কেটিং এর কাজও করে থাকি। এক্ষেত্রে একটি বিশেষ সফওয়্যার কিনে ব্যবহার করতে হয়। এটা সবার কাছে থাকে না বলে সবাই এই কাজগুলো করতে পারে না। ইমেইল মার্কেটিং এর পাশাপাশি SEO Optimization, SEO Marketing, Personal Assistance এর কাজও করে থাকি। Personal Assistance এর নির্দিষ্ট কোন ক্ষেত্র নাই। এক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট যা বলে তাই করতে হয়।
জাকারিয়া: এবার আসি পেমেন্টের ব্যাপারে। টিমের সদস্যদেরকে কতটুকু অর্থ দেয়া হয়? আপনারা কি কোন কমিশন রাখেন?
মামুন: হ্যাঁ আমরা এক্ষেত্রে ১৫% কমিশন রাখি। মূলত একজন সদস্য যখন আমাদের এখানে যোগ দেয় তখন তাকে আমরা ট্রেনিং দিয়ে তৈরি করে নেই। ট্রেনিংটা বিনামূল্যে করিয়ে থাকি। এরপর সে যখন ওডেস্কে একটা কাজ করে তখন সেখান থেকে ১৫% কমিশন রেখে বাকিটা তাকে দিয়ে দেয়া হয়।
জাকারিয়া: সদস্যরা প্রতিমাসে গড়ে কত টাকা আয় করে?
মামুন: এটা কাজের উপর নির্ভর করে। কেউ কেউ হয়ত মাসে মাত্র ৫৫ টাকা আয় করে আর কারো কারো ক্ষেত্রে মাসে বাইশ/তেইশ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। যে প্রতিদিন ৬ ঘন্টা করে কাজ করে তার আয় ৮-১০ হাজারের মত হয়ে যায়। আর যার কাজের রেট প্রতি ঘন্টায় ২ ডলার, তার জন্য অনায়াসে ২০ হাজার টাকা চলে আসে। আমাদের টিমের প্রতি সপ্তাহে আয় থাকে প্রায় ৫০০ ডলার এবং মাসে আমরা কমপক্ষে ২,০০০ ডলার আয় করি।
জাকারিয়া: পেমেন্টের হিসেব নিকাশ কি সব আপনার মাধ্যমেই হয়ে থাকে?
মামুন: একজন সদস্য কত রেটে কাজ করছে বা কত আয় করছে তা দেখতে পারে না। আসলে তাদের দিক থেকে এটা অনেকটা একটা কোম্পানীতে কাজ করার মত হয়ে থাকে। কোম্পানীতে কাজ করবে, নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন পাবে। কিন্তু আমি যেটা করি, টিমে স্বচ্ছতা থাকার জন্য প্রতিমাসে বিলের যে PDF ফাইল পাই, তা মেইল করে সবাইকে পাঠিয়ে দেই। তখন সবাই দেখতে পারে কে কত ঘন্টা কাজ করেছে, কত রেটে কাজ করেছে, মোট কত আয় করেছে ইত্যাদি। তবে ওডেস্ক এটা করতে কখনও অনুমতি দেয় না।
জাকারিয়া: আপনাদের গ্রুপে যোগ দিতে হলে নূন্যতম কি কি জানতে হবে?
মামুন: কম্পিউটারের বেসিক কাজগুলো এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারলেই যথেষ্ঠ। আসলে আমরা যে সকল সদস্য নেই তারা Notepad কি তাই অনেক সময় জানে না। একজনকে আমি বলেছিলাম আপনি Notepad চালু করেন। সে বলল, ভাই আমার কম্পিউটারে Notepad ইন্সটল করা নাই। সে পরবর্তীতে আমাদের সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পেয়েছে। তাকে সেভাবে দক্ষ করে নেয়া হয়েছে।
আমার টিমে যোগ দেয়ার কয়েকটা শর্ত আছে -
১) ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে। কারণ মাসের ৭-১০ তারিখ ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে সদস্যদের টাকা দেয়া হয়।
২) সিটিসেল মোবাইল সংযোগ থাকতে হবে, কম খরচে কথা বলার জন্য। আমাদের দেশে ইন্টারনেটের স্পীড যদি আরেকটু বেশি থাকত তাহলে আমরা অনায়াসেই ভয়েস কন্ফারেন্স করতে পারতাম।
৩) যে কোন আদেশ বিনা বাক্যে পালন করতে হবে।
জাকারিয়া: প্রশিক্ষণটা কিভাবে দিয়ে থাকেন?
মামুন: আমাদের বেশিরভাগ প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে। আমাদের কয়েকটি ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে যাতে কিভাবে বিড করতে হবে, কিভাবে প্রোফাইল সাজাতে হবে ইত্যাদি বর্ণনা করা আছে। বিড করার পর বায়ারের সাথে যোগাযোগের উপর কয়েকটা টিউটোরিয়াল রয়েছে। টিউটোরিয়ালগুলো আমাদের নিজস্ব সার্ভারে আপলোড করা আছে, আমরা তাদেরকে লিংকগুলো দিয়ে দেই। টিউটোরিয়ালগুলো বাংলাতে আমি নিজেই তৈরি করেছি। নতুন কাজের ক্ষেত্রে টিউটোরিয়াল তৈরি করা হয় না, সেক্ষেত্রে ফোনে তাদেরকে বুঝিয়ে দেই। সাথে টিম ভিউয়ার সফটওয়্যার দিয়ে দেখিয়ে দেই কোথায় কোথায় ক্লিক করে কাজ করতে হবে।
জাকারিয়া: তাদেরকে ইংরেজিটা কতটুকু জানতে হয় বা না জানলে হয় কি না?
মামুন: আসলে তাদেরকে ইংরেজি না জানলেও চলে। টিমের মাধ্যমে কাজ করার সুবিধা হচ্ছে নির্দেশনা বোঝার কোন ঝামেলা হয় না। ক্লায়েন্ট ইমেইল পাবার পর আমাকে ফোন করলে আমি সাথে সাথে তা বুঝিয়ে দেই। আর বিড করার জন্য তাদেরকে একটা কভার লেটার তৈরি করে দেই।
জাকারিয়া: আপনাদের টিমে মেয়েদের কাজের পারফর্মেন্স কি রকম?
মামুন: বর্তমানে ৪ জন মেয়ে আমাদের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। পুরুষদের চেয়ে মেয়েরা খুব সৎভাবে এখানে কাজ করেন।
জাকারিয়া: টিমের অন্যান্য সদস্যদের সম্পর্কে একটু বলুন।
মামুন: টিমে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সারই শিক্ষার্থী। ফলে পরীক্ষা চলাকালীন সময় আমরাদেরকে কম প্রজেক্টে কাজ করতে হয়। তখন প্রায় মাসখানেকের মত বিড করা বন্ধ করে দেই। টিমে ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন পাঁচজন। আমার যে ম্যানেজার উনার বাড়ি হল নারায়নগঞ্জে। গ্রাফিক্স ডিজাইনার মিরপুর থেকে কাজ করেন। বেশিরভাগ সদস্যই ঢাকাতে অবস্থিত, আমিই শুধুমাত্র খুলনাতে।
জাকারিয়া: আপনাদের এত বড় টিমের নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার জন্য কোন ফোরাম কি আছে?
মামুন: এজন্য গুগল গ্রুপে "আলফা ডিজিটাল প্রজেক্ট" নামে আমাদের একটা গ্রুপ আছে। এটা একটা প্রাইভেট গ্রুপ যাতে যে কেউ যোগ দিতে পারে না। প্রজেক্টগুলো আমরা এই গ্রুপের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করে থাকি।
জাকারিয়া: টিম পরিচালনার পাশাপাশি আপনি কি অন্য কোন কাজ করছেন?
মামুন: না না, এই সকল কাজ করেই আর সময় পাই না।
জাকারিয়া: টিমের মাধ্যমে কাজ করার সময় কোন ধরনের সমস্যা হয় কি?
মামুন: আমি প্রায় সময় একটা সমস্যায় পড়ি, তা হচ্ছে কেউ যখন কোন ভুল করে তখন তাকে অনলাইনে শাস্তি দেয়ার কোন উপায় থাকে না। সর্বোচ্চ ফোনে দুইটা বকা দেয়া যায়। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, অদক্ষ লোক নিয়ে কাজ করার সময় এরা কিছুদিন পর নিজে আলাদাভাবে কাজ করা শুরু করে দেয়। সেক্ষেত্রে টিমটা আর বড় হয় না। সবার মধ্যে একতা থাকলে শীর্ষ অবস্থানটা অনায়াসে ধরে রাখা যেত। কিছুদিন আগেও আমরা ওডেস্কের শীর্ষ দশে ছিলাম, এখন আমাদের স্কোর অনেক কমে গেছে। টিমে সবাইতো আর সৎভাবে কাজ করে না। যেমন একটা প্রজেক্টে বায়ার বলেছিল আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে, তার সার্ভারে একটা কাজ চলছে। তখন টিমের একজন ওডেস্কের টিম সফটওয়্যারটি প্রায় ৫ ঘন্টা চালিয়ে রেখে বায়ারকে বলেছিল সে কাজ করেছে এবং সে অনুযায়ী বিল করে দেয়। আসলে তখন সে কোন কাজই করেনি। ওই কাজে ১২ জন মেম্বার কাজ করত, বায়ার তখন সবাইকে ৫ এর মধ্য ১ ফিডব্যাক দিয়ে দেয়। এখন চিন্তা করেন ১২ জনের ফিডব্যাক যদি ১ করে পড়ে তাহলে কোম্পানীর প্রোফাইল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। তখন আমাদের গড় ফিডব্যাক ২ এর কাছাকাছি চলে আসে। এরপর দীর্ঘ ৩ মাস কাজ করতে করতে এখন ৩.৭৮ এ উঠে এসেছে।
ওডেস্কে দুই ধরনের কাজ পাওয়া যায় - Fixed এবং Hourly Job। ওডেস্কে কাজের সমস্যার মধ্যে আরেকটা হচ্ছে এখানে Fixed Job প্রজেক্টে টাকা পাবার গ্যারান্টি পাওয়া যায় না। অনেক বায়ার আছে যারা মধুর মধুর কথা বলে Fixed Job প্রজেক্টগুলো করায়। কাজ শেষে আর টাকা দেয় না। গত মাসে এভাবে আমি ৭৫০ ডলার লোকসান করেছি। ওডেস্কে Fixed Job কাজ না করে শুধুমাত্র Hourly Job গুলো করা উচিৎ। এই সাইটে অন্যান্য সাইটের মত Escrow তে টাকা জমা রাখার সুবিধা নেই। এটা নতুনদের খেয়াল রাখা উচিৎ।
জাকারিয়া: টিমে কাজ করার ক্ষেত্রে মজা কিরকম?
মামুন: মজা তো অনেক। আসলে এই লাইনে কাজ করতে এসে অনেক অনেক সম্মান পেয়েছি, যেটা আমি আমার চাকুরী জীবনে পাইনি। এইটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া, টাকা পয়সা পাই বা না পাই। আমাদের সম্পন্ন করা সকল প্রজেক্টের মধ্যে সেরা এবং আনন্দদায়ক প্রজেক্ট হলো- "টেলিকমিনেকেশন সার্ভে"। এই প্রজেক্ট এ আমরা নরওয়ের এক বায়ারের হয়ে বাংলাদেশের সকল মোবাইল কোম্পানীর উপর সার্ভে করেছিলাম। গ্রামীন ফোন, বাংলালিঙ্ক, ওয়ারিদ, সিটিসেল, একটেল এবং টেলিটক কোম্পানীর মধ্যে কার কল রেট কেমন, কে কি কি সুবিধা দিচ্ছে, কে কে ইন্টারনেট সুবিধা দেয়, কোন কোম্পানীর শতকরা গ্রাহক কত, কার কভারেজ কেমন - এই সকল বিষয় এর উপর আমরা রিপোর্ট করি। এই প্রজেক্টে আমরা ৪ মাসের অধিক সময় কাজ করি। সেই বায়ার বাংলাদেশে অনেক বড় একটা ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিল। এখন তারা ফিলিপাইন এ কাজ করছে।
জাকারিয়া: ওডেস্কে টিম নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
মামুন: এই টিমকে আমি অনেক বড় করব। ওডেস্কে একটা টিম আছে যারা প্রায় ১১ লক্ষ ঘন্টা কাজ করে ফেলেছে। সেখানে আমরা মাত্র ১৩ হাজার ঘন্টা কাজ করেছি। ওরা অবশ্য ২০০১ সাল থেকে ওডেস্কে কাজ করছে। আমরা এক বছরে এই অবস্থানে এসেছি। আমার পরিকল্পনা হচ্ছে আমরাও এরকম একটা পর্যায়ে যাব, ওডেস্কের মধ্যে শক্ত একটা অবস্থান।
"আলফা ডিজিটাল" টিমের ওডেস্ক প্রোফাইলের ঠিকানা হচ্ছে www.alphadigital.tk।
দৃষ্টি আকর্ষণ - "আলফা ডিজিটাল" টিমে এই মূহুর্তে আর কোন নতুন মেম্বার নেয়া হচ্ছে না। টিম মেম্বারদের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের গ্রুপে যোগদান করতে পারেন।
http://groups.google.com/group/odesk-bangladesh
লেখক - মোঃ জাকারিয়া চৌধুরী
বিঃদ্রঃ - এই লেখাটি "মাসিক কম্পিউটার জগৎ" ম্যাগাজিনের "মে ২০১০" সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
স&#
০৪
প্রোভাডারদের জন্য এই সাইটে দুই
ধরনের ইউজার একাউন্ট রয়েছে। একটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সার প্রোভাইডার এবং অপরটি
হচ্ছে প্রোভাইডার কোম্পানি। স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে প্রথমটি সিলেক্ট করুন।
আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে রেজিষ্ট্রেশনের ধাপটি সম্পন্ন করুন। সফলভাবে
রেজিষ্ট্রেশন করার পর একটু সময় নিয়ে আপনার প্রোফাইল/রেজ্যুমে তৈরি করুন।
একজন প্রোভাইডারের প্রোফাইল কয়েকটি ভাগে বিভক্ত:
- My Account Summary: এই অংশে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, প্রতি ঘন্টা কাজের জন্য আপনি কত মূল্য পেতে ইচ্ছুক এবং সপ্তাহে কত ঘন্টা কাজ করতে পারবেন তা উল্লেখ করুন। ওডেস্কে কাজ শুরু করার পূর্বে আপনাকে একটি Readiness Test দিতে হবে। রেডিনেস টেস্ট হচ্ছে একধরনের পরীক্ষা যার মাধ্যমে যাচাই করা হয় আপনি সাইটের সকল পলিসি ঠিকমত বুঝতে পেরেছেন কি না। পরীক্ষা দেবার জন্য Take the oDesk Readiness Test লিংকটিতে ক্লিক করুন। পরীক্ষায় এক ঘন্টা সময়ের মধ্যে ২৫ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে এবং উত্তীর্ণ হতে শতকরা ৯০ ভাগ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হবে। পরীক্ষাটি হবে "ওপেন বুক" পদ্ধতিতে অর্থাৎ সমাধানের জন্য সাইট কর্তৃক প্রদত্ত্ব বিভিন্ন ধরনের ম্যানুয়ালের সাহায্য নিতে পারবেন। তাই পরীক্ষার পূর্বে ম্যানুয়ালগুলো ভাল করে পড়ে নিন।
- Portfolio Projects: আপনি অতীতের সম্পন্ন কাজের বিস্তারিত বর্ণনা, ছবি এবং এটাচমেন্ট এই অংশে দিতে পারবেন।
- Employment History: কোন কোম্পানিতে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে এই অংশে দিতে পারবেন।
- Education: এই অংশে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করুন।
- Certifications: এই অংশে আপনি যেসব টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছেন তার ফলাফল উল্লেখ করুন।
- Skills: বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতার বর্ণনা এই অংশে উল্লেখ করুন।
- Categories & Job Alerts: ওডেস্কে যে ধরনের কাজ করতে চান তা উল্লেখ করুন।
- Other Experiences: আপনার অন্য কোন অভিজ্ঞতা এই অংশে উল্লেখ করতে পারেন।
স&#
০৩
অনলাইন টেস্ট:
প্রোভাডারদের দক্ষতা প্রমাণের জন্য ওডেস্কে রয়েছে ১৫০ টির বেশি পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা। পরীক্ষাগুলো নৈর্ব্যত্তনিক পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেকোন সময় যেকোন পরীক্ষা দেয়া যায়। বেশি বেশি পরীক্ষা দিয়ে নতুন প্রোভাইডাররা তাদের প্রোফাইলকে আরো উন্নত করতে পারে। পরীক্ষা দেবার জন্য লগইন করার পর Find Providers ট্যাব থেকে Qualifications Tests লিংকটি সিলেক্ট করুন। প্রতিটি টেস্টে ৪০ টি প্রশ্ন থাকে এবং সময় থাকে ৪০ মিনিট। একই টেস্ট ইচ্ছে করলে ৩০ দিন পর পুনরায় দিতে পারবেন।
টিম ম্যানেজমেন্ট:
এই সাইটের মাধ্যমে একজন বায়ার একই প্রজেক্টে একসাথে অনেক প্রোভাইডারকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োগ দিতে পারে। টিম ম্যানেজ করার জন্য রয়েছে "টিম রুম" যেখানে বায়ার একসাথে সকল টিম মেম্বারদের বিভিন্ন তথ্য, কাজের ইতিহাস এবং সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারে। রয়েছে "টাইম এনালাইজার" যা কোন মেম্বার কখন এবং কত সময় ধরে কাজ করছে তা প্রদর্শন করে। বায়ারদের জন্য আরো রয়েছে প্রোভাইডারদের কম্পিউটারের স্ক্রিনশট দেখার ব্যবস্থা, ডেস্কটপ স্ক্রিন শেয়ারিং, বাগ ট্রেকিং এবং সাবভার্শন হোস্ট করার জন্য সার্ভার।
প্রোভাইডারদের জন্য সুবিধামূহ:
প্রোভাইডাররা তাদের কাজের দক্ষতা এবং বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে পারে তাদের কম্পিউটারে "oDesk Team" নামক একটি সফটওয়্যার ইন্টলেশনের মাধ্যমে। এই সফটওয়্যার একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ক্লায়েন্টের কাছে প্রোভাইডারের কাজের সর্বশেষ অবস্থা স্ক্রিনশট, কাজের মেমো, এক্টিভিটি লগ এবং ওয়েবক্যাম থাকলে ছবি প্রেরণ করে থাকে। ওয়েবক্যামের মাধ্যমে প্রোভাইডার ইচ্ছে করলে টিমের অন্যান্য মেম্বারদের সাথে যোগাযোগ করে কাজ করতে পারে। সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে Community ট্যাব থেকে Resources লিংকটি ক্লিক করুন। উইন্ডোজ, ম্যাক এবং লিনাক্স ইউজারদের জন্য সফটওয়্যারটির আলাদা আলাদা ভার্সন রয়েছে।
অর্থ উত্তোলনের পদ্ধতিসমূহ:
অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মত ওডেস্ক থেকে অনেকগুলো পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলন করা যায়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড, মানিব্রোকারস এবং ওয়ার ট্রান্সফার। ডেবিট কার্ডটির মাধ্যমে আপনি পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
প্রোভাডারদের দক্ষতা প্রমাণের জন্য ওডেস্কে রয়েছে ১৫০ টির বেশি পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা। পরীক্ষাগুলো নৈর্ব্যত্তনিক পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেকোন সময় যেকোন পরীক্ষা দেয়া যায়। বেশি বেশি পরীক্ষা দিয়ে নতুন প্রোভাইডাররা তাদের প্রোফাইলকে আরো উন্নত করতে পারে। পরীক্ষা দেবার জন্য লগইন করার পর Find Providers ট্যাব থেকে Qualifications Tests লিংকটি সিলেক্ট করুন। প্রতিটি টেস্টে ৪০ টি প্রশ্ন থাকে এবং সময় থাকে ৪০ মিনিট। একই টেস্ট ইচ্ছে করলে ৩০ দিন পর পুনরায় দিতে পারবেন।
টিম ম্যানেজমেন্ট:
এই সাইটের মাধ্যমে একজন বায়ার একই প্রজেক্টে একসাথে অনেক প্রোভাইডারকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়োগ দিতে পারে। টিম ম্যানেজ করার জন্য রয়েছে "টিম রুম" যেখানে বায়ার একসাথে সকল টিম মেম্বারদের বিভিন্ন তথ্য, কাজের ইতিহাস এবং সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারে। রয়েছে "টাইম এনালাইজার" যা কোন মেম্বার কখন এবং কত সময় ধরে কাজ করছে তা প্রদর্শন করে। বায়ারদের জন্য আরো রয়েছে প্রোভাইডারদের কম্পিউটারের স্ক্রিনশট দেখার ব্যবস্থা, ডেস্কটপ স্ক্রিন শেয়ারিং, বাগ ট্রেকিং এবং সাবভার্শন হোস্ট করার জন্য সার্ভার।
প্রোভাইডারদের জন্য সুবিধামূহ:
প্রোভাইডাররা তাদের কাজের দক্ষতা এবং বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে পারে তাদের কম্পিউটারে "oDesk Team" নামক একটি সফটওয়্যার ইন্টলেশনের মাধ্যমে। এই সফটওয়্যার একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ক্লায়েন্টের কাছে প্রোভাইডারের কাজের সর্বশেষ অবস্থা স্ক্রিনশট, কাজের মেমো, এক্টিভিটি লগ এবং ওয়েবক্যাম থাকলে ছবি প্রেরণ করে থাকে। ওয়েবক্যামের মাধ্যমে প্রোভাইডার ইচ্ছে করলে টিমের অন্যান্য মেম্বারদের সাথে যোগাযোগ করে কাজ করতে পারে। সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে Community ট্যাব থেকে Resources লিংকটি ক্লিক করুন। উইন্ডোজ, ম্যাক এবং লিনাক্স ইউজারদের জন্য সফটওয়্যারটির আলাদা আলাদা ভার্সন রয়েছে।
অর্থ উত্তোলনের পদ্ধতিসমূহ:
অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মত ওডেস্ক থেকে অনেকগুলো পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলন করা যায়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পেওনার ডেবিট মাস্টারকার্ড, মানিব্রোকারস এবং ওয়ার ট্রান্সফার। ডেবিট কার্ডটির মাধ্যমে আপনি পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
স&#
০২
১. প্রয়োজন দক্ষ জনশক্তি:
সাইটির কার্যপ্রণালী বুঝতে এই উদাহরণটি লক্ষ্য করুন - ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মি: জর্জের একটি ওয়েব ডিজাইন এজেন্সি গঠন করতে ইচ্ছুক। তার দরকার একটি ভাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টিম যারা কম মূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করে দিতে পারবে। এক্ষেত্রে অনলাইন ফ্রিল্যান্সার হচ্ছে জর্জের একমাত্র পছন্দ। কিন্তু একসাথে কয়েকজনকে ইন্টারনেটে ম্যানেজ করা বেশ ঝামেলাপূর্ণ। আবার যদি একই প্রজেক্টে কয়েকজন প্রোগ্রামারকে একসাথে কাজ করানোর প্রয়োজন হয় তাহলে জর্জ কি করবে?
২. চাকুরী তৈরি:
সমাধান হচ্ছে ওডেস্ক সাইট। জর্জ ওডেস্কে একটি একাউন্ট তৈরি করল এবং প্রোগ্রামার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ইত্যাদি বিভিন্ন পদে কয়েকটি চাকুরী তৈরি করল। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রতি পদে ১০ টির অধিক আবেদনপত্র জমা পড়ল। প্রার্থীদের প্রত্যেকের রয়েছে ওডেস্কে একটি প্রোফাইল, কাজের ইতিহাস এবং অন্য বায়ার কর্তৃক প্রদত্ত ফিডব্যাক। প্রত্যেক প্রার্থীর প্রোফাইল, কাভার লেটার, পোর্টফলিও এবং বিভিন্ন টেস্টের সার্টিফিকেট পর্যবেক্ষণ করে জর্জ বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ প্রার্থী পেয়ে গেল।
৩. চাকুরী প্রদান:
প্রার্থীদের সাথে ইমেইল এ যোগাযোগ এবং চ্যাট করে জর্জ দুইজনকে পছন্দ করল। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে রাশিয়া থেকে মি: সার্জে ও তার কোম্পানি এবং আরেকজন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফ্রিল্যান্সার লেখিকা মিস. ক্রিস্টিন। জর্জ তাদেরকে প্রতি ঘন্টায় মূল পরিশোধের ভিত্তিতে নিয়োগ দিল।
৪. টিম ম্যানেজমেন্ট:
সার্জে এবং ক্রিস্টিন প্রতিদিন যখন কাজ শুরু করে তখন নিজেদের কম্পিউটারে একটি সফটওয়্যার চালু করে রাখে। এই সফটওয়্যার প্রতি ১০ মিনিট পরপর তাদের কম্পিউটারের স্ক্রিনশট এবং অন্যান্য তথ্য ওডেস্কের সার্ভারে প্রেরণ করে। অন্যপ্রান্তে জর্জ জানতে পারছে তার টিমে সর্বশেষ অবস্থা এবং তাদের কর্ম দক্ষতা সম্পর্কে। এই ব্যবস্থায় কেউ কাজ না করে বসে আছে কিনা তাও জর্জ জানতে পারছে অথবা কাজ করতে গিয়ে কেউ সমস্যায় পড়লে তাকে সাহায্য করতে পারছে।
৫. সাপ্তাহিক মূল্য প্রদান:
প্রতি সপ্তাহে জর্জ ওডেস্কের "টাইম লগ" থেকে জানতে পারছে কে কতটুকু সময় কাজ করেছে। তার টিমের প্রাপ্য মূল্য জর্জ ওডেস্ককের মাধ্যমে সাথে সাথে প্রদান করতে পারছে।
সাইটির কার্যপ্রণালী বুঝতে এই উদাহরণটি লক্ষ্য করুন - ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মি: জর্জের একটি ওয়েব ডিজাইন এজেন্সি গঠন করতে ইচ্ছুক। তার দরকার একটি ভাল ওয়েব ডেভেলপমেন্ট টিম যারা কম মূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করে দিতে পারবে। এক্ষেত্রে অনলাইন ফ্রিল্যান্সার হচ্ছে জর্জের একমাত্র পছন্দ। কিন্তু একসাথে কয়েকজনকে ইন্টারনেটে ম্যানেজ করা বেশ ঝামেলাপূর্ণ। আবার যদি একই প্রজেক্টে কয়েকজন প্রোগ্রামারকে একসাথে কাজ করানোর প্রয়োজন হয় তাহলে জর্জ কি করবে?
২. চাকুরী তৈরি:
সমাধান হচ্ছে ওডেস্ক সাইট। জর্জ ওডেস্কে একটি একাউন্ট তৈরি করল এবং প্রোগ্রামার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ইত্যাদি বিভিন্ন পদে কয়েকটি চাকুরী তৈরি করল। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রতি পদে ১০ টির অধিক আবেদনপত্র জমা পড়ল। প্রার্থীদের প্রত্যেকের রয়েছে ওডেস্কে একটি প্রোফাইল, কাজের ইতিহাস এবং অন্য বায়ার কর্তৃক প্রদত্ত ফিডব্যাক। প্রত্যেক প্রার্থীর প্রোফাইল, কাভার লেটার, পোর্টফলিও এবং বিভিন্ন টেস্টের সার্টিফিকেট পর্যবেক্ষণ করে জর্জ বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ প্রার্থী পেয়ে গেল।
৩. চাকুরী প্রদান:
প্রার্থীদের সাথে ইমেইল এ যোগাযোগ এবং চ্যাট করে জর্জ দুইজনকে পছন্দ করল। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছে রাশিয়া থেকে মি: সার্জে ও তার কোম্পানি এবং আরেকজন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফ্রিল্যান্সার লেখিকা মিস. ক্রিস্টিন। জর্জ তাদেরকে প্রতি ঘন্টায় মূল পরিশোধের ভিত্তিতে নিয়োগ দিল।
৪. টিম ম্যানেজমেন্ট:
সার্জে এবং ক্রিস্টিন প্রতিদিন যখন কাজ শুরু করে তখন নিজেদের কম্পিউটারে একটি সফটওয়্যার চালু করে রাখে। এই সফটওয়্যার প্রতি ১০ মিনিট পরপর তাদের কম্পিউটারের স্ক্রিনশট এবং অন্যান্য তথ্য ওডেস্কের সার্ভারে প্রেরণ করে। অন্যপ্রান্তে জর্জ জানতে পারছে তার টিমে সর্বশেষ অবস্থা এবং তাদের কর্ম দক্ষতা সম্পর্কে। এই ব্যবস্থায় কেউ কাজ না করে বসে আছে কিনা তাও জর্জ জানতে পারছে অথবা কাজ করতে গিয়ে কেউ সমস্যায় পড়লে তাকে সাহায্য করতে পারছে।
৫. সাপ্তাহিক মূল্য প্রদান:
প্রতি সপ্তাহে জর্জ ওডেস্কের "টাইম লগ" থেকে জানতে পারছে কে কতটুকু সময় কাজ করেছে। তার টিমের প্রাপ্য মূল্য জর্জ ওডেস্ককের মাধ্যমে সাথে সাথে প্রদান করতে পারছে।
স&#
০১
ওডেস্ক হচ্ছে একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেখানে সারা পৃথিবী থেকে
প্রায় ১ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার কাজ করছে। এই মূহূর্তে ওডেস্কে চার হাজারের উপর
কাজ রয়েছে। সাইটটিতে প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য "একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ
মূল্য" হিসেবে অথবা "প্রতি ঘন্টা কাজের জন্য অর্থ" উভয় প্রকারের কাজ পাওয়া
যায়। তবে ঘন্টা হিসেবে কাজের জন্য ওডেস্ক বেশি জনপ্রিয়। এই পদ্ধতিতে কাজ
করে তুলনামূলকভাবে অন্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো থেকে বেশি অর্থ উপার্জন করা
সম্ভব। ওডেস্ককে আপনি একটি ভার্চুয়াল অফিসের সাথে তুলনা করতে পারেন,
যেখানে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে ইন্টারনেটে উপস্থিত থেকে কাজ করবেন। ওই
সময়ে আপনার কি কি কাজ করছেন তা আপনার চাকুরীদাতা (বায়ার) - এর কাছে একটি
নির্দিষ্ট সময় পর পর স্কিনশটের মাধ্যমে রিপোর্ট পৌছে যাবে। আপনি যতক্ষণ কাজ
করবেন ঠিক ততটুকু মূল্য আপনাকে পরিশোধ করা হবে। অতিরিক্ত সময় কাজ করলে তার
মূল্যও আপনি পাবেন। কমিশন হিসেবে এই সাইটের চার্জ হচ্ছে মোট মূল্যের ১০%।বর্তমানে ওডেস্ক আমাদের দেশী প্রোভাডারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাইটিতে এই মূহূর্তে এক হাজারের উপর বাংলাদেশী প্রভাইডার রেজিষ্ট্রেশন করেছেন যাদের মধ্য অনেকেই ৫০০ ঘন্টার উপর কাজ করে ওডেস্ক থেকে অর্থ উপার্জন করেছেন। সাইটে রয়েছেন ডাটা এন্ট্রে অপারেটর, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কনসাল্টেন্ট, প্রোগ্রামার, ওয়েবসাইট ডেভেলপার, লেখক ইত্যাদি পেশার বাংলাদেশী প্রোভাডার। আশা করা যায় বেকার সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশের তরুন সমাজ ওডেস্কের মত সাইটগুলোকেই একসময় তাদের ভার্চুয়াল অফিস হিসেবে বাছাই করে নিবে।
ওডেস্কে একটি প্রজেক্টের বিবরণ:
সাইটে লগইন করার পর Find Jobs ট্যাব থেকে আপনার পছন্দের কাজের বিভাগে ক্লিক করুন। একটি প্রজেক্টের পৃষ্ঠায় প্রজেক্ট সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য থাকে। প্রজেক্টে কাজ করতে চাইলে আপনাকে প্রজেক্টিতে আবেদন করতে হবে। তবে সবকিছুর পূর্বে অবশ্যই আপনাকে Readiness Test দিয়ে তাতে উত্তীর্ণ হতে হবে। অনেক প্রজেক্টে আবেদন করতে বিভিন্ন টেস্টের সার্টিফিকেট আপনার থাকতে হবে। তাই যত বেশি টেস্ট দিবেন তত বেশি প্রজেক্টে আবেদন করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। বায়ার আপনাকে নির্বাচিত করলে আপনার কম্পিউটারে "oDesk Team" সফটওয়ারটি চালু করুন এবং লগইন করে কাজ শুরু করুন।
No comments:
Post a Comment